নিশিকান্ত ভূঞ্যাঃ- ১৪ অক্টোবরের সকাল। প্রথম সারির তিনটি বাংলা সংবাদপত্র জনগণের কাছে রাজ্যে SACT নিয়োগ সংক্রান্ত একটা খবর পৌঁছে দিলো। উচ্চশিক্ষা নিয়ে ভাবিত মানুষের কাছে খবরটা আলোচনার বিষয় হয়ে উঠল দ্রুত। এরই সাথে সাথে গবেষক ও ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে একটা চাঞ্চল্য তৈরি করল। এখন প্রশ্ন কী আছে সেই খবরে? এই উত্তর দেওয়ার আগে একটু আগের কথা বলা যাক।
গত ৯ অক্টোবর, ইউজিসি-এর পূর্বাঞ্চলীয় দপ্তর থেকে একটা চিঠি পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারকে দেওয়া হয়েছিল। চিঠিতে বলা হয়েছিল রাজ্য সরকার যে SACT নিয়োগ করেছে তা কতটা আইনসঙ্গত সেই বিষয়ে সরকারের বক্তব্য ইউজিসিকে জানাতে হবে। এই চিঠিটি খুব তাড়াতাড়ি সোস্যাল মিডিয়াতে ভাইরাল হল। অনেক শিক্ষিত মানুষজন বললেন “যাক ইউজিসি অনেকদিন পর নড়ে বসেছে”। ইউজিসি-র এই প্রথম তৎপরতা দেখে USRESA এর সদস্যরা একটু আনন্দিত হল। আসলে আনন্দিত হওয়াটাই তো স্বাভাবিক। কারণ তারা যে নিজেদের ব্যক্তিগত স্বার্থ বিসর্জন দিয়ে উচ্চশিক্ষা ক্ষেত্রে দুর্নীতির বিরুদ্ধে আন্দোলন করছে। তারা গবেষক ও ছাত্র-ছাত্রীদের পাশে থাকতে চেয়েছে সবসময়। আর তাই তারা জনসমর্থনও পেয়েছে।
কিন্তু, আমরা জানি যে কোনও আন্দোলনকে ব্যর্থ করতে বিরোধী শক্তি সবসময় প্রস্তুত থাকে। তারা আন্দোলন দমনের জন্য বিভিন্ন মাধ্যম ব্যবহার করে। USRESA-র আন্দোলনকেও ব্যর্থ করতে দুষ্টু শক্তি বিভিন্ন পন্থা অবলম্বন করেছে। তারা ব্যবহার করেছে সংবাদপত্রকে। সংবাদপত্রের মাধ্যমে একটা ভুল খবর ছড়িয়ে USRESA-র আন্দোলনকে কলুষিত করার চেষ্টা করা হয়েছে। বিভিন্ন পত্র পত্রিকা আজ খবরে প্রকাশ করেছে ইউজিসি যে চিঠি দিয়েছে তা ভুয়ো। এই চিঠির কোনও সত্যতা নেই।
কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে সত্যিই কি এই খবরের কাগজগুলোর বক্তব্য সঠিক, নাকি তারা নিজেরাই মানুষকে ভুয়ো খবর দিচ্ছে?
USRESA-র তরফ থেকে জানানো হয়েছে যে এই সংগঠনের সদস্যরা একটা গণ ইমেল কর্মসূচি গ্রহণ করেছিল কিছুদিন আগে। ইউজিসি-কে পাঠানো এই ইমেইলে রাজ্যে উচ্চশিক্ষা ক্ষেত্রে দুর্নীতির বিষয়টি তুলে ধরেছিল। ইমেইলের উত্তরে ইউজিসি জানিয়েছে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারের উচ্চশিক্ষা দপ্তরের কাছে তারা SACT নিয়োগের ক্ষেত্রে UGC র নিয়ম ভঙ্গের বিষয়ে উত্তর চেয়েছে ।
তাছাড়া গত ১৩ অক্টোবর USRESA-র সদস্যরা ইউজিসির পূর্বাঞ্চলীয় দপ্তরের গিয়েছিলেন ডেপুটেশন জমা দিতে। সেখানে ইউজিসি-র কর্মকর্তারা স্বীকার করেছিলেন যে ওই চিঠি তাদের দপ্তর থেকে পাঠানো হয়েছে। ফলে আমাদের সামনে অনেকগুলো প্রশ্ন চিহ্ন এসে হাজির হয়েছে। তাহলে কি সংবাদপত্রগুলো খবরের সত্যতা যাচাই না করেই তা প্রকাশ করতে শুরু করেছে? নাকি গণতন্ত্রের চতুর্থ স্তম্ভ কোনও চাপের কাছে মাথা নত করছে? যারা প্রতিদিন সকালে গরম চায়ে চুমুক দিতে দিতে জেলা, রাজ্য, দেশের খবর জানতে চান তারা ভুল খবর পড়তে পড়তে অভ্যস্ত হবেন নাকি প্রতিবাদ করবেন?
সকল খবর সবার আগে ফেসবুকে ফ্রী পেতে চাইলে আমাদের পেজ লাইক করুন। Click Here..