নিশিকান্ত ভূঞ্যাঃ- পশ্চিমবঙ্গের সরকারি ও সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত কলেজগুলিতে রাজ্য সরকারের ইউজিসি ও কলেজ সার্ভিস কমিশনের নিয়ম বহির্ভূত প্রায় ১৫০০০ হাজার স্যাক্ট নামক অধ্যাপক নিয়োগের বিরোধিতা করে ছাত্র-ছাত্রী, গবেষক এবং কলেজে পড়ানোর যোগ্যতাসম্পন্ন পদপ্রার্থীদের সংগঠন United Students and Research Scholars Association (USReSA) কলকাতা হাইকোর্টে কেসও দাখিল করে এই বছরের জানুয়ারির শেষের দিকে। আগামীকাল কলকাতা হাইকোর্টের ৮ নম্বর কক্ষে সকাল ১১ টায় মহামান্য বিচারকমণ্ডলী আই.পি. মুখার্জি ও অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সেই কেসের শুনানি রয়েছে।
এই সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মহম্মদ জুবের আলমের কাছে স্যাক্টের বিরোধিতা করে তাদের কেস করার কারণ জানতে চাইলে তিনি জানান “স্যাক্টদের কেউই কলেজে পড়ানোর যোগ্যতার পরীক্ষা দিয়ে চাকরি পাচ্ছেন না। কলেজে পড়াতে গেলে যেসমস্ত পরীক্ষা পদ্ধতির মধ্য দিয়ে আসতে হয় তা তারা কেউ আসছেন না। তাছাড়া স্যাক্ট ক্যাটাগরি-২, যাদের নেওয়া হচ্ছে তাদের ইউ জি সি ও সি এস সি-র নিয়ম অনুযায়ী কলেজে পড়ানোর কোনো যোগ্যতাই নেই এবং ১৫০০০ মধ্যে এদের সংখ্যাই অধিক। কোন্ যোগ্যতা থাকলে তাকে স্যাক্ট ক্যাটাগরি-২ তে নেওয়া হচ্ছে সেটাও রাজ্য সরকার স্পষ্ট করেনি। ফলে এ নিয়ে রয়েছে বিরাট প্রশ্ন চিহ্ন।”
এই সংগঠনের প্রেসিডেন্ট জয়দেব পাত্র জানালেন “স্যাক্টদের মধ্যে যদিও ক্যাটাগরি-১ দের সংখ্যা খুবই সামান্য তবু আমরা আমাদের কেস থেকে তাদের বাদ দিতে পারিনি। কারণ তারাও কলেজে পড়ানোর সঠিক পদ্ধতি মেনে, যোগ্যতার পরীক্ষা দিয়ে চাকরি পাচ্ছেন না। আমরা চাই সকলে ইউ জি সির নিয়ম মেনে সি এস সির মাধ্যমে কলেজে পড়াতে আসুক। এভাবে ফ্রিতে চাকরি পাইয়ে দেওয়ার বিষয়টিকে কোনো ভাবেই মেনে নেওয়া যায় না।”
বহু শিক্ষিত মানুষ এবং গবেষকরা আশঙ্কা করছেন স্যাক্ট নিয়োগের ফলে উচ্চশিক্ষার ভিত ধ্বংস হয়ে যাবে, শিক্ষার মানের প্রভূত অবনমন ঘটবে। এমনকি কলেজে পড়ানোর যাবতীয় যোগ্যতা যাদের রয়েছে সেইসমস্ত যোগ্য প্রার্থীরা কলেজের চাকরি থেকে বঞ্চিত হবেন। কারণ তাদের সিটগুলি অনৈতিক ও অসাংবিধানিকভাবে নিয়োগপত্র পাওয়া এইসমস্ত স্যাক্টরা দখল করে বসে থাকবেন ৬০ বছর বয়স পর্যন্ত।
মহামান্য বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় ও জয়মাল্য বাগচির বেঞ্চে গত ৬ আগস্ট স্যাক্ট সংক্রান্ত রায়ে চার সপ্তাহের মধ্যে পেপার বুকে স্যাক্ট কেসের সঙ্গে যুক্ত সমস্ত পক্ষকে নিজেদের কাগজপত্র জমা দিতে বলা হয়। চার সপ্তাহের মধ্যে এই শুনানি হচ্ছে এটিকে অনেক আইনজীবী এবং বুদ্ধিজীবী খুবই ইতিবাচক ভাবে দেখছেন। করোনা পরিস্থিতিতে হাই কোর্টের কাজ-কর্মেরও তারা ভূয়সী প্রশংসা করেছেন। ফলে আগামীকালের কোর্টের রায় পশ্চিমবঙ্গের উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে যে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হতে চলেছে তা আর বলবার অপেক্ষা রাখে না।
For Latest Update Follow Us on