নিশিকান্ত ভূঞ্যাঃ- আজ ভারতের সর্বোচ্চ বিচারালয় সুপ্রিম কোর্ট রায় দিয়েছে যে, দেশের সমস্ত কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের চূড়ান্ত বর্ষের পরীক্ষা নিতে হবে এবং তারপর সেই সব ছাত্র ছাত্রীদের ডিগ্রি প্রদান করতে হবে। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, করোনা আবহে দেশের বিভিন্ন রাজ্য সরকার কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় পরীক্ষা না নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। কিন্তু গত 6 জুলাই ইউ জি সি জানায়, আগামী 30 সেপ্টেম্বরের মধ্যে সব বিশ্ববিদ্যালয়ের চূড়ান্ত বর্ষের পরীক্ষা নিতে হবে। এরপরই করোনা পরিস্থিতিতে পরীক্ষা বাতিলের দাবিতে সুপ্রিমকোর্টে মামলা হয়। যার রায় আজ সুপ্রিম কোর্ট দিল।
এই রায়ে ইউ জি সি -এর নির্দেশকে কার্যত মান্যতা দেওয়া হয়েছে। সুপ্রিম কোর্ট আজ শুক্রবার নির্দেশ দেয় যে, দেশের সমস্ত কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের চূড়ান্ত বর্ষের পরীক্ষা নিয়ে ডিগ্রি প্রদান করতে হবে। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় ডিগ্রি প্রদান এর একমাত্র প্রতিষ্ঠান হলো ইউ জি সি। তাই সুপ্রিম কোর্ট ইউ জি সি এর দাবিকে মান্যতা দিয়ে আজ রায় দিল। ফলে কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের চূড়ান্ত বর্ষের পরীক্ষা ছাত্রছাত্রীদের দিতেই হবে।
এমতাবস্থায় সুপ্রিম কোর্টের রায়ের ফলে বিপাকে পড়তে চলেছে বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতকস্তরের তৃতীয় বর্ষের কয়েক হাজার ছাত্র-ছাত্রী। কারণ ইতিমধ্যে বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক স্তরের তৃতীয় বর্ষের চূড়ান্ত পরীক্ষার ফল প্রকাশ করেছে বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। গত 04/ 08/2020 তারিখে বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ স্নাতকস্তরের তৃতীয় বর্ষের পরীক্ষার ফল প্রকাশ করেছে। এরপর বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয় কতৃপক্ষ স্নাতকত্তোর স্তরে বা P.G Course এ ভর্তির জন্য অনলাইনে আবেদন করার বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। স্নাতকোত্তর স্তরে বা P.G কোর্সে ভর্তির আবেদন প্রক্রিয়া ইতিমধ্যে চলছে 24/08 /2020 থেকে। যা 04/09/2020 তারিখ পর্যন্ত অনলাইনে আবেদন প্রক্রিয়া চলবে।
কিন্তু সুপ্রিম কোর্টের রায়ের ফলে এখন বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক স্তরে তৃতীয় বর্ষের পরীক্ষা নিতে হবে। তাহলে এখন প্রশ্ন হলো বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তাড়াহুড়ো করে স্নাতক স্তরের তৃতীয় বর্ষের ফলাফল প্রকাশ করে স্নাতকত্তোর স্তরে ভর্তির জন্য আবেদন প্রক্রিয়া করার দায় ভার কি এড়িয়ে যেতে পারে ?? এছাড়া সুপ্রিম কোর্টের রায়ের ফলেও স্নাতক স্তরের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র ছাত্রীদের সমস্যার সম্মুখীন হতে হবে। কারণ বেশিরভাগ বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্গত কলেজগুলোতে সিলেবাস শেষ হয়নি। আবার অনলাইনে ক্লাস হলেও নেটওয়ার্কের সমস্যার জন্য ক্লাস করতে পারেনি অনেক ছাত্রছাত্রী। স্মার্ট ফোন না থাকার জন্য অনেক ছাত্রছাত্রী অনলাইনে ক্লাস করা থেকে বঞ্চিত হয়েছে। এমতাবস্থায় পরীক্ষার হলে ছাত্রছাত্রীরা যে অসুবিধা পড়বে তা বলার অপেক্ষা রাখে না ।
বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক স্তরের একজন ছাত্রী সুমনা দে বলেন যে, “নেটওয়ার্ক এর সমস্যার কারনে অনলাইন ক্লাস করতে পারিনি, এমন কি আমার অনেক বন্ধু -বান্ধবীরাও অনলাইনে ক্লাস করতে পারেনি। আমাদের syllabus ই তো অনেক বাকি শেষ হতে! তাই খুব চিন্তিত।”
স্নাতকস্তরের তৃতীয় বর্ষের আর একজন ছাত্র বলেন যে,” গ্রাম্য এলাকায় -নেটওয়ার্ক এর সমস্যার কারনে কলেজ কর্তৃপক্ষ দ্বারা অনুমোদিত অনলাইন ক্লাসগুলিতে উপস্থিত থাকতে পারিনি। এছাড়া আমার কলেজের আনেকেই একই সমস্যার সম্মুখিন হয়েছে। সমস্ত ছাত্রছাত্রীর কথা ভেবে আমাদের কলেজের শিক্ষক মহাশয়রা আমাদের ক্লাস গুলি বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছিল। ক্লাস বন্ধ হয়ে যাওয়ার কারনে আমাদের syllabus টি শেষ হয়ে ওঠেনি। আমার অনুরোধ এই যে পরীক্ষা নেওয়ার যে সিদ্ধান্তটি নেওয়া হয়েছে সেটি syllabus টি অতি দ্রুত শেষ করার পরেই exam নেওয়া হলে খুবই উপকৃত হতাম।”
বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতকস্তরের তৃতীয়বর্ষে পাঠরত এক ছাত্রের বাবা বলেন, “সুপ্রিম কোর্টের রায় শুনলাম। এখন এই করোনা পরিস্থিতিতে কিভাবে পরীক্ষা কেন্দ্রে গিয়ে আমার ছেলে পরীক্ষা দেবে তাই ভেবে আমি ও আমার পরিবার খুব চিন্তিত।” যাইহোক বেশিভাগ অভিভাবকগন সুপ্রিম কোর্টের রায়ে চিন্তিত তাদের ছেলে মেয়েকে নিয়ে। বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ইতিমধ্যে স্নাতকস্তরের তৃতীয় বর্ষের ফলাফল প্রকাশ ও স্নাতকত্তোর স্তরে ভর্তির জন্য আবেদন প্রক্রিয়া শুরু করে দিয়ে বেজায় বিপাকে পড়তে চলেছে বলে একাংশ শিক্ষা অনুরাগী মনে করেছেন।
শিক্ষক নিয়োগে সরকারের কতটা সদিচ্ছা রয়েছে??? শিক্ষক নিয়োগের নতুন বিজ্ঞপ্তি কি প্রকাশ হবে??????
For Latest Update Follow Us on