নিশিকান্ত ভূঞ্যাঃ- এমন কোনও পরিস্থিতি কল্পনা করুন যখন আপনার ফোন, স্মার্ট ওয়াচ বা অন্য কোনও ডিভাইসে ব্যাটারি চলে গেছে এবং সেগুলি রিচার্জ করার জন্য আপনার কাছে বিকল্প কোনো কিছুই নেই, যার মাধ্যমে আপনি রিচার্জ করতে পারেন। অন্য ধরনের শক্তির উৎস সেই সময়টি কার্যকরী হতে পারে। ধরুন আপনি দৌড়াদৌড়ি, হাঁটাচলা বা ওই ধরণের কিছু একটা করছেন, ওইসব ক্রিয়াকলাপের মাধ্যমে নিমিষেই আপনি বৈদ্যুতিক শক্তি উৎপাদন করতে পারবেন এবং তা দিয়ে সহজেই স্মার্ট ডিভাইসে চার্জ দিতে পারবেন। এই রকমই এক ধরণের ডিভাইস হলো পাইজোইলেক্ট্রিক ডিভাইস।
এই গুলি শব্দ, বায়ু এবং এমনকি হাত দিয়ে থাপ্পড় মারা, হাতের আঙুলের স্পর্শ, পায়ের আঙ্গুল টিপ, হাত দিয়ে বাঁকানো ইত্যাদির মতো মানুষের শারীরিক ক্রিয়াকলাপের মধ্য দিয়ে বৈদ্যুতিক শক্তি উৎপাদন করতে পারে। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গবেষকদের একটি দল এই ধরণের ডিভাইস বানিয়েছেন (পাইজোইলেক্ট্রিক ন্যানো জেনেরেটর), যেটি সর্বোচ্চ 4 মিলিওয়াট শক্তি উৎপন্ন করতে সক্ষম হয়েছে এবং এর মাধ্যমে 120 ভোল্ট ভোল্টেজ তৈরি হয়েছে। প্রায় 4 মাস ধরে ব্যবহার করার ফলেও ডিভাইসটির কোনও কার্যকারিতা হ্রাস পায় না। এর ফলে শক্তি উৎপাদনকারী যন্ত্র হিসাবে এর সম্ভাবনা বেশ খুবই উজ্জ্বল। এই স্ব-চালিত সিস্টেমটি বাণিজ্যিক ভাবে উপলব্ধ এলইডি লাইট কে আলোকিত করতে, ছোটো টেবিল ঘড়িচালাতে এবং ছোটো ছোটো বৈদ্যুতিন ডিভাইসে বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে সক্ষম।
পুরো গবেষণার কাজটি তত্ত্বাবধান করেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান শাখার অধ্যাপক ডক্টর কল্যাণ কুমার চট্টোপাধ্যায় মহাশয়। অধ্যাপক চট্টোপাধ্যায় এবং তাঁর ছাত্ররা শুভঙ্কর মন্ডল, তুফান পাল, সৌমেন মাইতি এবং বিক্রম কুমার দাস CsPbBr3 পেরভস্কাইট এবং PVDF ব্যবহার করে উচ্চ পারফরম্যান্স যুক্ত পাইজো-ইলেক্ট্রিক ডিভাইসটি তৈরি করেছেন।এই গবেষণার কাজটি “ন্যানোএনার্জি” জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে(ইমপ্যাক্ট ফ্যাক্টর: 16.602) এই শিরোনাম সহ “Human Motion Interactive Mechanical Energy Harvester Based on All Inorganic Perovskite-PVDF” (জার্নাললিঙ্ক: https://www.sciencedirect.com/science/article/abs/pii/S2211285520304274).
PVDF গুলি সাধারণত পাইজোইলেক্ট্রিক বৈশিষ্ট্য প্রদর্শনের জন্য, আলফা ফেজ থেকে বিটা ফেজে পরিবর্তিত হয়। CsPbBr3 এর ন্যানো রড কে PVDF ম্যাট্রিক্সে অন্তর্ভুক্ত করার ফলে PVDF এর আলফা ফেজটি বিটা ফেজে পরিবর্তিত হয়। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের শুভঙ্কর মন্ডলের মতে এই ডিভাইস টি বানানোর জন্য PVDF ম্যাট্রিক্সে বিটা ফেজের মাত্রা 90% এরও বেশি বৃদ্ধি করা হয়েছিল।
এই গবেষণাটির অন্যতম গবেষক তুফান পাল বলেছেন, “ডিভাইসটি আঙুলের অল্প স্পর্শ, হাতের বাহুর বাঁকানো, পায়ের আলতো চাপ, ফোনের কম্পন এবং মৃদু বায়ু চাপের (টেবিলে ফ্যান বা সিলিং ফ্যান বা হাওয়া দেওয়া) মতো খুব ছোট বাহ্যিক শক্তি বুঝতে পারে ও সেই থেকে ভোল্টেজ উৎপাদন করতে পারে।” এই ডিভাইসটি 4 মাস পর্যন্ত কোনও পরিবর্তন ছাড়াই শক্তি সরবরাহ করতে পারে। শুধু মাত্র হাত বাঁকানোর জন্য ডিভাইসটি প্রায় 4 ভোল্ট ভোল্টেজ উৎপাদন করতে সক্ষম হয়েছিল। যখন ডিভাইসে আঙুল এবং পা দিয়ে চাপ দেওয়া হয় তখন ডিভাইস টি যথাক্রমে 20 ভোল্ট এবং 12 ভোল্ট ভোল্টেজ উৎপাদন করে।
ডাঃ সৌমেন মাইতির মতে, ডিভাইসটি অত্যন্ত আলোক সংবেদনশীল যা স্ব-চালিত ফটো অ্যাকটিভ পাইজোইলেক্ট্রিক শক্তি উৎপাদন কারি হিসেবে কাজ করে।আমরা ডিভাইসটি কে মেঝে বা রাস্তার উপরে অথবা মেট্রো বা রেল স্টেশনের মেঝেতে রেখে বৈদ্যুতিক শক্তি উৎপাদন করতে পারি এবং সেই শক্তিকে সঞ্চয় করে আরও বড় বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি চালনার মাধ্যমে বৃহৎ আকারের রূপ দেওয়ার চেষ্টা করছি।অধ্যাপক কল্যাণ কুমার চট্টোপাধ্যায় মহাশয় বলেছেন, অদূর ভবিষ্যতে আমরা এই প্রযুক্তির বাণিজ্যিকীকরণে অত্যন্ত আশাবাদী।
সকল খবর সবার আগে ফেসবুকে ফ্রী পেতে চাইলে আমাদের পেজ লাইক করুন। Click Here..
পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার ডেবরা ব্লকে অজ্ঞাত যুবতীর অর্ধনগ্ন মৃতদেহ ! রাজ্যে মহিলারা কতটা সুরক্ষিত ?
It is a remarkable things for everyone. Also that is important device for all of us .
I personally known tufan da and Suvankar da very well. I am very happy after seen this news.
Great work with innovative solution