নিশিকান্ত ভূঞ্যাঃ- ঘটনার সূত্রপাত হয় ফেসবুক লাইভে তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্র দেবাংশু ভট্টাচার্যের প্রশ্নের উত্তর দেওয়াকে কেন্দ্র করে। কি এমন বললেন যাতে করে উচ্চশিক্ষিত যুবক যুবতীরা সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রতিবাদে সবর হলেন ?
সোহেল রানা নামে এক যুবক প্রশ্ন করেন যে, ” এস এস সি কবে হবে ভাই? বুড়ো হয়ে গেলাম তো।” এই প্রশ্নের উত্তরে তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্র দেবাংশু ভট্টাচার্য বলেন, “বুড়ো যদি হয়ে থাকেন তাহলে বার্ধক্য ভাতার জন্য অ্যাপ্লাই করতে পারেন আপাতত। ” যদিও তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্র এটা জোকস হিসেবে বলেন।
তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্র দেবাংশু ভট্টাচার্যের এহেন মন্তব্য উচ্চ শিক্ষিত যুবক যুবতীরা অপমানজনক বলে মনে করছেন। যা নিয়ে উচ্চ শিক্ষিত যুবক যুবতীরা সোশ্যাল মিডিয়ায় তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্র দেবাংশু ভট্টাচার্যের ক্ষমা চাওয়ার দাবি করে।
এর পর তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্র দেবাংশু ভট্টাচার্য সোশ্যাল মিডিয়ায় বলেন,” আজ্ঞে না স্যার ! উত্তর ওই নির্দিষ্ট ব্যক্তির “বুড়ো হয়ে যাচ্ছি তো” লাইনটিকে ভিত্তি করে ছিল, SSC নিয়ে নয় । ওই ভিডিওতে প্রত্যেকটি প্রশ্নের উত্তর এমনই ব্যঙ্গাত্মকভাবে দিয়েছি । ওটাই ভিডিওটার বৈশিষ্ট্য । তবে আপনাদের মনের সকল প্রশ্নের উত্তর দিতে, প্রাইমারি, আপার প্রাইমারি, এস এস সি নিয়ে একটা ভিডিও খুব তাড়াতাড়ি করব। এটা কিন্তু সিরিয়াস ভিডিও হবে।
দিলীপ বাবু চোর চিটিংবাজ বলার পরেও যে বাঙালি জাগেন না, তারা মোহনপুর থেকে বার্ধক্য ভাতা, মাঝে মধ্যে আমার কথায় জেগে যান দেখে ভালো লাগছে ! তবে মোহনপুরের ওটা ভুল করেছিলাম, ক্ষমা প্রার্থনা করেছি । এটা ভুল বলিনি, তাই বেশ করেছি । এটা স্পেশালি আইটি সেলের লোকজনদের উদ্দ্যেশ্যে বললাম ।
আর সাধারন অরাজনৈতিক চাকরি প্রত্যাশীদের উদ্দ্যেশ্যে বলি, একটা নির্দিষ্ট প্রশ্নের উত্তরে পরিচিত কাউকে ব্যঙ্গাত্মক উত্তর দেওয়া নিয়ে যারা আপনাকে উস্কে দিতে চাইছে, তারা আপনার বন্ধু নয় । আপনাদের অনুরোধ করব, সম্ভব হলে পুরো ভিডিওটা দেখে আসুন, বুঝবেন কি ধরনের ভিডিও ছিল। আসলে “স্বাধীনতা অমর রহে” বলে দিলীপ বাবুর পার্টি ফেঁসে আছেন, ঋদ্ধর “স্কাইপ বিপ্লব” নিয়ে বামেদের অবস্থা ক্রিটিক্যাল, তাই দুই পার্টি মিলে আমায় একটু চাগিয়ে ধরতে চাইছে আর কি ! ঠিক মোহনপুরের মতন.. মনে আছে আমায় নিয়ে কত বিদ্রুপ, ব্যঙ্গ, সমালোচনা ?? তারপরে সুজন বাবু ও পার্টির ইয়ং বিপ্লবীরা গাদাগাদি করে মিটিং করেছেন, দিলীপ, সায়ন্তন, রাজু বাবুরা করেছেন, কাউকে নিয়ে দেখেছেন বিদ্রুপের বঙ্গোপসাগর তৈরি হতে ?? আজ্ঞে না স্যার ! কারণ ওরা তো দেবাংশু নহে ! এবারও ব্যাপারটা তাই । ওই ভিডিওতে আমার পরিচিত কিছু মানুষের ও অপরিচিত কিছু মানুষের প্রশ্ন নিয়েছিলাম, স্পেশালি পরিচিতদের প্রশ্নের সর্কাস্টিক উত্তর দিয়েছি শুধুমাত্র তাদের বক্তব্যের ভিত্তিতে । প্রশ্নের মেরিট সেখানে গুরুত্বহীন ছিল । ধরুন একটা প্রশ্ন ছিল, “তোমার গলার স্বর কিভাবে গম্ভীর করা যায় ?”… এটার মেরিট নিয়ে ভেবে যদি উত্তর দিতাম তাহলে বলতে হত গারগল করব, স্পিচ থেরাপি করব ইত্যাদি ইত্যাদি.. কিন্তু আমি উত্তর দিয়েছিলাম “অমিতাভ বচ্চনের সাথে বৈঠক করব”.. আশা করি বুঝতে পারছেন, ভিডিওটা কিরকম মুডে করা ! আপনি সেন্টিমেন্টে নেবেন না, কারণ আপনি যোগ্য ব্যক্তি । যিনি ৪৫ বছরেও চাকরি প্রার্থী, তার প্রশ্নের আঙুল আলিমুদ্দিনের দিকে হওয়া উচিৎ, দেবাংশুর দিকে নয় ।”
এখন প্রশ্ন উঠছে তাহলে কি তৃনমুল কংগ্রেস SSC না হওয়ার পেছনে এবং SSC চাকুরী প্রার্থীদের বয়স বাড়ার পেছনে বামের দায়ী করছেন। এখন দেখার বিষয় উচ্চ শিক্ষিত যুবক যুবতীদের জন্য মাননীয়া মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার অতি দ্রুত শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করেন কিনা এবং নতুন করে শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেন কিনা । সেই দিকেই তাকিয়ে রয়েছে লক্ষ লক্ষ উচ্চশিক্ষিত বেকার যুবক যুবতীরা।