করোনা পরিস্থিতির মধ্যে রাখীবন্ধন উৎসব এর দিনে ঝাড়গ্রাম শহরের একটি বেসরকারী হলে পশ্চিমবঙ্গের কুড়মী জনজাতি সংগঠনগুলি এবং সমাজের বিশিষ্ট সমাজকর্মীদের নিয়ে একটি কুড়মী সমন্বয় বিষয়ক বৈঠক ডেকেছিল । সমন্বয় বৈঠকে উপস্থিত ছিল কুড়মী সমাজ, কুড়মী সেনা ও আদিবাসী জনজাতি কুড়মী সমাজ সহ বিভিন্ন বিশিষ্ট সমাজকর্মীবৃন্দ।
মূলত কুড়মী জনজাতিদের দীর্ঘদিনের বঞ্চনার দাবীকে সামনে রেখে জঙ্গলমহলের চারটি জেলার প্রতিনিধিবর্গদের নিয়ে এই সমন্বয় আলোচনা হয় ও একটি অস্থায়ী কমিটি গঠন করা হয়। সর্বসম্মতিক্রমে এই কমিটিতে রয়েছেন – মনোরঞ্জন মাহাত (যুগ্ম আহ্বায়ক), সুশীল কুমার মাহাত (যুগ্ম আহ্বায়ক), রাজেশ মাহাত (রাজ্য সভাপতি, কুড়মি সমাজ), সব্যসাচী মাহাত (কুড়মি সমাজ), অশোক মাহাত (রাজ্য সম্পাদক, আদিবাসী জনজাতি কুড়মি সমাজ), লক্ষ্মীকান্ত সিংহ মাহাত (আদিবাসী জনজাতি কুড়মি সমাজ), রবীন্দ্রনাথ মাহাত (সভাপতি, কুড়মি সেনা), সহদেব মাহাত (কুড়মি সেনা), শ্যামল কুমার মাহাত (সমাজকর্মী) ও চিন্ময় মাহাত (সমাজকর্মী)। এই মঞ্চের মুখপাত্র হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া নেন মনোরঞ্জন মাহাত, সামাজিক মাধ্যমে প্রচারের দায়িত্ব দেওয়া হয়- অরূপ মাহাত ও অভিজিৎ মাহাতকে।
কুড়মী সংগঠনগুলির পক্ষ থেকে জানানো হয়, আগামী দিনে এই সমন্বয় মঞ্চ বৃহত্তর আন্দোলন কর্মসূচী নিতে চলেছে। আজকের নবগঠিত “কুড়মী সমন্বয় মঞ্চ” থেকে সংগঠনের মুখপাত্র মনোরঞ্জন মাহাত বাবু বলেন, ‘আমাদের কুড়মী জনজাতি গোষ্ঠীকে অগনতান্ত্রিক ভাবে বাদ দেওয়া হয়েছে। তাই আমরা কোন কথা শুনতে চাই না, যেকোন ভাবে আমাদের পুনরায় ST তালিকাভুক্ত করতে হবে। নাহলে আগামী বিধানসভা নির্বাচনে চূড়ান্ত পদক্ষেপ নিতে চলেছে এই সমন্বয় মঞ্চ।’ প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, গত লোকসভা নির্বাচনে জঙ্গলমহলে তৃণমূল কংগ্রেসের ভরাডুবি হয়েছে। এমতাবস্থায় বতর্মান বিজেপির দখলে রয়েছে ঝাড়গ্রাম। এদিকে তৃণমূল নেত্রী ইতিমধ্যে জঙ্গলমহলকে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে। কারন ইতিমধ্যে ছত্রধর মাহাতে রাজ্যকমিটিতে স্থান দিয়েছেন এবং পূবে ছত্রধর মাহাতর স্ত্রী ও ছেলে চাকরি দিয়েছেন তৃণমূল সরকার। তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ছত্রধর মাহাতর হাত ধরে জঙ্গলমহল দখল করতে চাইছেন বলে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞ মহলের দাবি।সামনে ২০২১ এর বিধানসভার নির্বাচন এমতাবস্থায় জঙ্গলমহলের কুড়মী সম্প্রদায় দীর্ঘদিন ধরে দাবী জানিয়ে আসছে যে,কুড়মী সম্প্রদায়কে ST তালিকাভুক্ত করতে হবে। কুড়মী সংগঠনগুলির পক্ষে থেকে এই হুশিয়ারি দেওয়া হয় যে,সামনে ২০২১ এর বিধানসভার নির্বাচনের আগে তাদের দাবী সরকার না মানলে তারা বৃহত্তর আন্দোলনে যাবে।তাই একদিকে বিজেপি ঘাড়ে নিঃশ্বাস ফেলছে তার উপর কুড়মী সম্প্রদায়ের হুশিয়ারি তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কো যে বেগ পেতে হবে বলে রাজনৈতিক মহল মনে করেন। তবে শেষ পর্যন্ত কুড়মী সম্প্রদায়ের দীর্ঘদিনের দাবী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মেনে নেয় কিনা তা দেখার বিষয়।
Read Previous Post
আগামীকাল অতিথি অধ্যাপক মামলার শুনানি কলকাতা হাইকোর্টে! অপেক্ষায় গবেষক ও স্যাক্ট অধ্যাপকেরা !